মো. আবুল কাশেম,বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : স্বাস্থ্য সেবায় সরকারী সুযোগ-সুবিধা বাড়লেও এর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার মানুষেরা। ঠিকমত ডাক্তারের দেখা না পাওয়া, কৃত্রিম ঔষধ সংকট, পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে চরম অব্যবস্থাপনা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং কর্মচারী কর্তৃক চিকিৎসা সেবা-এমন এন্তার অভিযোগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে। যে কারণে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে উল্টো ভোগান্তির শিকার হতে হয় রোগীদের। বিভিন্ন প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় চিকিৎসকদের দায়িত্বে অবহেলা নিয়েও অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কাগজে-কলমে ডাক্তাররা হাসপাতালের দায়িত্বে থাকলেও প্রয়োজনের সময় অনেকের দেখাই মেলে না। প্রায়শই ডাক্তারদের বদলে নার্স, আয়া বা সুইপাররাই চিকিৎসা দেন আগত রোগীদের-এমন অভিযোগও কম নয়।
সরজমিন সকাল ৮টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এ গিয়ে দেখা যায়, জরুরী বিভাগে বেশ কয়েকজন মহিলা রোগী ডাক্তারের জন্যে অপেক্ষমান। দায়িত্বরত ডাক্তার তারেক তখনও অনুপস্থিত। খোঁজ নিয়েও দেখা মেলেনি তার। দ্বিতীয় তলার পুরুষ ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, দু’জন বয়স্ক রোগী ভর্তি আছেন। পাশেই জাল বুনছিলেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সুইপার দাবীদার আবদুল গফুর। হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভেতরে জাল বুনার বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে এর কোনো সদুত্তোর দিতে পারেনি সে। সিনিয়র স্টাফ নার্স সেলিনা খানম আবদুল গফুরকে সুইপার দাবী করলেও তাকে চিনেন না স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও। আবার, টিএইচওর নাম তার জানা নেই-ফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন সেলিনা খানম।
তিনদিন আগে শ্বাসকষ্টজনিত রোগ নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া আজির উদ্দিন (৭০) ও সাতদিন আগে ভর্তি হওয়া জুনাব আলী (৫০) জানান, ভর্তি হবার পর থেকে তাদের দেখতে কোনো ডাক্তার আসেননি। কথিত সুইপার আবদুল গফুরই মাঝে মধ্যে ঔষধ খাইয়ে দেয় তাদের। মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা খয়রুন নেছার (৭০) মেয়ে এ প্রতিবেদককে জানান, আমরা এখানে চিকিৎসাই পাচ্ছিনা। ঔষধও ফার্মেসী থেকে কিনে আনতে হয়।
সকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বে থাকা ডা. তারেকের সাথে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এ সময় জরুরী বিভাগে না থাকলেও আমি ডরমেটরীতে ছিলাম। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হলে টিএইচও স্যারের কাছে ‘লিখিত অভিযোগ’ দিয়ে জানুন।